চিন্তা
যদি শাহাদুজ্জামানের কথাশিল্পের শিরদাঁড়া তাহলে বলা যায়Ñ তাঁর গল্পকে তা
শক্ত বাঁধনে বেঁধে রেখেছে। মেরুদ-ের কশেরুকার হাড়গুলোর মতো ভাবনাসমূহ জোড়
লেগে সেখানে শিল্পের মেজাজ তৈরি করে। মোজাইকের মত ছোপ ছোপ সাদা কালো রঙিনের
কম্বিনেশনে কথা বলে শব্দগুলো। গল্পে নৈর্ব্যক্তিক হতে হয় লেখককে। তিনি
নৈর্ব্যক্তিক তবে অনুভূতির জোয়াল নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে ভীষণ ব্যক্তিক।
বর্তমান কালের গল্প সরাসরি সমাজ-রাজনীতির কথা বলে না। কিন্তু
শাহাদুজ্জামানের গল্প সমাজ ও রাজনীতির গভীর তলদেশ খুঁড়েই মণি-মুক্তা তুলে
আনে।
পাঠক মনে প্রশ্ন তৈরি করার জন্য সদা ব্যস্ত তিনি। বিবেকের বাণ হাকিয়ে
বিদ্ধ করেন পাঠকের স্থানু শরীর ও মন। যারা ইতোমধ্যে লজ্জা হারিয়ে বসে আছেন
তারা দারুণ লজ্জিত হন তাঁর গল্পের চরিত্রগুলো অবলোকন করে। গল্পে জোর করে
বুঝে নেবার দায় নেই পাঠকের তাঁর চরিত্রের মেজাজ মর্জি। আমাদের নিত্যদিনের
ক্ষতি ও ক্ষতের দগদগে ফিরিস্তি সেসব বিকার ও নির্বিকার মানুষরা। মনে হয়
এখনি ঘটল কিংবা এইতো চোখে দেখলাম তাদের।
এই সাম্প্রতিক সময়ের
জটপাকানো সুতাকে শিল্পের সূচিভেদ্য করে এফোর-ওফোর করতে তিনি পারঙ্গম
শিল্পী। নিত্য যন্ত্রণা-কাতর বাস্তব ধীরে ধীরে জট খোলে তাঁর গল্পে। এটা ঠিক
যে আমাদের এ-সময়ের শিল্পীদের মধ্যে তিনি আলাদা। সেটা তার কথন ও
বয়নবৈশিষ্ট্যের কারণেই। কয়েকটি বিহ্বল গল্প গ্রন্থের প্রত্যেকটি গল্পেই
আমাদের সাম্প্রতিক নিষ্করুণ বাস্তবের প্রতিচ্ছবি আছে। চরিত্রের মনোলোকের
নানা জটিলতা উদ্ঘাটন করে তিনি আমাদেরকে ক্ষয়িত ও অবক্ষয়িত বাস্তবের
দৃশ্যকল্প তৈরি করেন। দেশ ও আন্তর্জাতিক নানা ব্যবস্থাপত্রের সঙ্কটগুলো
বিবেকবান শিল্পীর তুলিতে আশ্রয় গ্রহণ করে।
শাহাদুজ্জামানের গল্পে
মধ্যবিত্ত শ্রেণির আশাহত হবার যন্ত্রণা পাঠককে নাড়া দিতে সক্ষম। বাংলাদেশের
প্রতিটি ঘরে উত্থিত স্বপ্ন ও সম্ভাবনা, স্বপ্নের মাত্রাছাড়া ভাঙন,
সমুদ্র-গভীর অতলান্তে হারিয়ে যাওয়া মানুষ তাঁর প্রতিটি গল্পের উপজীব্য।
শিল্প ও রাজনৈতিক অব্যস্থাপনার বাংলাদেশে মানুষের মরণপণ সংগ্রাম, বেঁচে
থাকার সীমিত প্রয়াসে চোরাবালির অন্ধকারে পা আটকে যাওয়া মানব জীবন, গা ঝেরে
উঠবার মত শক্তি সামর্থ্যরে অভাব, জীবনের তীব্র অপচয়Ñ এসব তাঁর গল্পে
বারবারই প্রত্যক্ষ হয়। এক সীমাহীন চোরাবালির দেশে হারিয়ে যাবার বাস্তবতা এর
শহর। অনেক বিদ্যাবুদ্ধি নিয়েও দারুণ এক পোড়খাওয়া ছ্যাকার দাগ প্রত্যেকটি
মানুষের শরীরে।
শাহাদুজ্জামানের গল্প শুরুর ভঙ্গি কখনো আকস্মিক।
আবার কখনো প্রবন্ধ সুলভ এক তথ্যের সমাহারে পাঠককে গোপনে চালিত করার কৌশলটা
তার দারুণ এককথায়। কখনো প্রশ্ন দিয়েই শুরু। প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতে
পাঠকের অগ্রসর হওয়া। শেষ পর্যন্ত প্রশ্নের উত্তর না পেয়ে যেন নিজের মাথার
চুল ছেড়া। প্রশ্নের উত্তরটি কখনো পাঠকের হয়ত আগেই জানা থাকে। তবু পরিচিত
পৃথিবীতে হাঁটতে হাঁটতেই পা ফসকে গর্তে পা ফেলার দায় লেখকের নেই। পাঠক
নিজেই সে গর্ত খোঁড়া জীবন-জটিলতার মাঝখানে হারিয়ে গিয়ে সমাধানহীন এক বিষম
সমাজের দিকে দৃষ্টি ফেরায়। দেশি-বিদেশি সংস্থা বা দাতাগোষ্ঠীর ভূয়াবাজিও
বাদ যায় না সেখান থেকে।
‘একটি কাঁঠাল পাতা আর মাটির ঢেলার গল্প’Ñ
নিরাবলম্ব মানবজীবনের গভীর রহস্য এখানে ওতপেতে আছে। মানুষ কিছুর ওপরে ভরসা
করে এটা তার চিরাচরিত রীতি। কিন্তু ভরসা তো কাঁঠাল পাতার মতই উড়ে চলা
খেরোখাতা। বৃষ্টি এলেই গলে যায় মাটির ঢেলা। কাঁঠাল পাতা জানে না তার আশ্বাস
কতটুকু আগলে রাখবে মাটির ঢেলাকে। মাটির ঢেলাও কি জানে তাকে গলে গিয়ে মৌলিক
মাটিতে মিশে যেতে হবে ঝর-বৃষ্টি নামলেই? আমাদের জীবনের আশ্বাস আর
ভরসাগুলোর মতই ঠুনকো এ চুক্তি। সঙ্গি হয়ত সঙ্গী নয়। বন্ধুত্ব কিংবা প্রেম
এই বুঝি নষ্ট হল অজানিত কলকল্লোলে।
‘ক্যালাইডোস্কোপ’ নির্লিপ্ত
ঔদাস্যে ভেসে চলা শহরবাসী উচ্চবিত্ত কারখানার মালিক নূরুল আলমের একান্ত
পারিবারিক কাহিনী। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছবির মতই সংসারের টুকরো টুকরো চিত্র ও
চরিত্রগুলো এ-গল্পে সামনে আসে। মানুষের অন্তহীন ভোগ, লালসা, দায়িত্বহীনতা
ইত্যাদি প্রসঙ্গগুলোই এখানে সাদাচোখে ভেসে ওঠে। ভোগজীবন ‘ব্যবহৃত হতে হতে
শুকরের মাংস’ হয়ে যায় ছেলে রুমির কাছে। শুভবোধের সূচনা তার সীমিত ধর্মবোধের
পথে। গৃহকর্ত্রী প্রতিশোধ নেবার আগুনে প্রজ্জ্বলন্ত অগ্নি। মেয়ে স্থূ’ল
ভোগী আর মেয়েজামাই চশমখোর শ্বশুরবাড়ির সম্পদলোভী। শিশুকর্তৃক হঠাৎ চালিত
ভিসি আর-এর পর্দায় ভেসে ওঠা উত্থিত নিগ্রোয়েড লিঙ্গ নুরুল আলমের পরিবারকে
বিব্রত করে। এটা ঘটমান বাস্তবতারই শেষ পরিণতি। যার সঙ্গে যুদ্ধ এখন
নিত্যদিনের।
একটি পরিবেশবাদী গল্প হতে পারে ‘ডোডো পাখির জন্য
নস্টালজিয়া’। প্রকৃতির প্রতি মানুষের দয়াহীন হস্তক্ষেপ অচিরেই ধ্বংস বয়ে
আনতে পারে। প্রকৃতি নিরব হলেও প্রতিশোধকামীÑ এই তো গল্পের মেসেজ। আবার হতে
পারে আমাদের রাজনৈতিক পক্ষ-প্রতিপক্ষের সীমাহীন পরিহাসময়তার চিত্র। মানুষজন
এরমধ্যেই হয়ত ফ্যকাসে বিবর্ণ হয়েছে। তারা নিশ্চিহ্ন হতে চায় না আর। তারা
কারো দাবার গুটি হতে চায় না। নিশ্চিহ্ন পেঁচা জীবন তার কাম্য নয় বলেই রাতের
অন্ধকারে ভয় দেখায়। এ তার বাঁচার প্রবল আকাক্সক্ষা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের
সর্বোচ্চ বিদ্যা গ্রহণ করে ভাল চাকরি নেই। সীমিত বেতনে হাড়ভাঙা খাটুনি
দিয়ে এনজিও অফিসের মন জুগে চলে হারুন। ‘হারুনের মঙ্গল হোক’ গল্পটি আজ
বাংলাদেশের প্রতিটি শিক্ষিত বেকার স্বল্পবেতনের চাকুরে প্রত্যেকটি
সম্ভাবনাময় যুবকের আত্মকথা। শাহাদুজ্জামানের এ-গল্পে এই টিপিক্যাল ও
ক্রিটিক্যাল বাস্তব অঙ্কিত। হারুনের মনোলৌকিক যন্ত্রণার ভয়াবহতার রূপ দিয়ে
তিনি গল্পটিকে করে তুলেছেন অনন্য। তাতে বাস্তবের ক্রিটিক্যালত্ব থাকল,
টিপিক্যালত্ব খসে গেল। দুর্বহ ও দুর্ভার জীবনের ভাষাও অনুভূতি নির্মাণে
খুবই যুৎসই হয়েছে।
‘স্যুট-টাই অথবা নক্ষত্রের দোষ’ গল্পের রফিকুল
ইসলাম ধ্বসে যাওয়া মূল্যবোধের মধ্যেও একটি বিবেকী মোচড় দিতে সক্ষম।
প্রজেক্টের চাকরি স্থায়ী না হবার ভয় থাকলেও তার সত্য কথন আমাদের নিñিদ্র্র
নিরাপদ জীবনেও ঝর তোলে। রিলিফ ওয়ার্কের ফাঁকি সারা পৃথিবীতেই হয়ত প্রচলিত
গল্প। কর্মকর্তাদের প্রচার-প্রচারণার বিষয়টি সবশেষে প্রাধান্য পায় এতে।
রফিকুল ইসলাম তার সততা ও মানবিকতার নিদর্শন শুধু নয়। তার ভেতরে আছে নিজের
অনিশ্চয়তাকে পাশ কাটিয়ে শিল্পসম্মত বয়ানের ভঙ্গি। তাতে শুধু শিল্পের মান
নয়, জীবন পরিণত হয়েছে শিল্পে। শিল্প ও জীবন তাই একাকার। গল্পকারের কৃতিত্বও
এখানেই। সীমাহীন দারিদ্রের মধ্যেও গরীব মানুষের ভেতরে যে চৈতন্যবোধ তার
তুলনা নেই। অথচ মানুষকে সহায়তা করতে আসা রিলিফ প্রজেক্টের কর্মকর্তাদের
নিচতা ও শঠতা হার মানায় গোটা জগতকে।
শাহাদুজ্জামান ক্যাডেট
কলেজের ছাত্র ছিলেন। অভিজ্ঞতা থেকেই বুঝতে পেরেছিলেন সৈন্য সেনাবাহিনী কি
জন্য আর কার কাজে লাগে সে কথা। সম্মানজনক জীবিকার আশায় যে পেশাগ্রহণ তার
পেছনে লুকিয়ে থাকা মিথ্যে আর যন্ত্রণাকে তিনি সামনে আনেন। ছোটবেলাতেই
কাহিনীর নায়ক শেখে লেফটেনেন্ট বানান। তাকে মনে রাখতে প্রয়োজন কয়েকটি বাংলা
শব্দ ‘মিথ্যা তুমি দশ পিপীলিকা’। গল্পের নামও তাই। গল্পের নামের মধ্যেই যে
আয়রনির আভাস সেটাকে মূর্ত করে তোলেন গল্পকার। শাহাদুজ্জামানের গোপন ইচ্ছা
যে পাঠকের ভাবনা তৈরি করা সেটা এ-গল্পের অন্তঃসার।
জীবিকা ও জীবনের
দায়ে সর্বস্ব খুইয়ে দিতে হয় বর্তমানে। পোষাক ইন্ডাস্ট্রির শহর মানুষের
সমস্ত স্বপ্ন শুষে বড় করছে কাউকে কাউকে। বাদবাকী শ্রমিক বস্তিবাসী হয়ে
উদ্বৃত্ত মূল্য যোগান দিচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজের ইজ্জত সম্ভ্রম তার
কোনও জামিনদারি নেই? ¯েœহের পুত্রকে বাড়িতে রেখে এসে যে জননী কলকারখানার
জীব হয়েছে তার নিরাপত্তাটুকুও উধাও হয়ে যায়। প্রেমও নীড় বাধার আশ্বাস দেয়নি
যাকে। সেই হতভাগী মমতাজের গল্প ‘ক্ষত যত ক্ষতি তত’।
চাঁদ ওঠে
চাঁদ ডোবে। চাঁদের জোসনায় আলোকিত হয় প্রেমলোক। স্বপ্নপুরির মায়ায় ভেসে ওঠে
নারীর দু চোখ। তবু প্রেম নয়। পারিবারিক জীবনের শিখিয়ে পড়িয়ে দেয়া নিশ্চিন্ত
জীবনযাপনের ফয়সালা নয়। বৃহত্তর মানুষের মুক্তির স্বপ্নে আকাক্সিক্ষত
যুবকের যে প্রগাঢ়তা তা কি ফলবে কোনোদিন? ‘কি আর বলতে চাই, আপনি নিজে জীবনের
সব মজা লুটেপুটে খাচ্ছেনÑ আর সবাইকে শোনাচ্ছেন মৃত্যুর কথা’Ñ বড় চাচার
সঙ্গে এই অসংযত সত্য বলা। রাতে বিছানায় শুয়ে ছোটভাই মঞ্জুর বড় ভাইকে বলাÑ
‘দাদা, তুমি কি জানো, চাচা যখন আয়েশে গুরগুরিতে টান দিয়ে ওসব মিষ্টিক কথা
বলছিলেন, তখন তারই গ্রামের কয়জন মানুষ শুধু না খেতে পাবার জন্য আত্মহত্যার
প্রস্তুতি নিচ্ছে?’ এই তো নিরেট বাস্তব বাংলাদেশেরÑ মুখে নীতির কথা অন্তরে
তাগিদহীন মায়াকান্না। শাহাদুজ্জামানের এ-গল্পের নায়ক দশ বছর জেল খাটে
কারখানার মালিককে খুনের আসামী হয়ে, অস্ত্রাগার লুট করার জন্য। জোসনালোকের
আলোক হয়ত তারই জন্য। রিজিয়া তাই জেলফেরত মঞ্জুকে পুকুর ঘাটে বলেÑ ‘খিয়াল
করিছেন মঞ্জু ভাই, আপনি গিরামে আলেই আকাশে খুব জোসনা হয়।’ কিন্তু স্বপ্ন
ভঙ্গের বেদনায় আরেকজন আবিষ্ট হয় সে মঞ্জুর বড় ভাই।
‘কতিপয় ভাবুক’
গল্পটিতে আছে মানুষের সিদ্ধান্তহীন ভাবনা করার জটিলতা। মানবজীবনের কিছু
সমস্যা আছে যা তার সাংস্কৃতিক পরিম-লে গড়ে ওঠা বিশ্বাস ও আবেগের দ্বারা
বশীভূত। একান্ত কল্পনাচারী একটি গল্প বলে মনে হলেও সমাধানের কষ্ট-কল্পনায়
যে শক্তি ব্যয় হয় পাঠকের তাতে জীবন বোধকে শানিত করার প্রধাবনা আছে
নিঃসন্দেহে। আর এখানেই গল্পটির ক্ষমতা।
যে স্বপ্ন-সম্ভাবনা নিয়ে
মুক্তিযুদ্ধে মানুষ অংশগ্রহণ করে যুদ্ধ পরবর্তীকালে তাদের কেউ কেউ নিরাশার
গহীনে প্রবেশ করেন। আবার কেউ যুদ্ধ ভুলে গিয়ে ব্যবসায়ী হয়ে পসার জমিয়ে
বসেন। কেউ নীতি বিসর্জনের উৎসবে মাতেন। ‘অগল্প’ সে রকমেরই একটি গল্প।
যেখানে শুরুতেই যুদ্ধ ও বাস্তবতার ঐতিহাসিক ব্যাখ্যা দিয়ে গল্পের সূত্রপাত
হয়েছে। ‘বৎস, আমি শান্তির পক্ষে, কারণ শান্তির সময় পুত্র পিতার কবর খনন
করিয়া থাকে, আর যুদ্ধের সময় পিতা পুত্রের।’ হেরাক্লিটাসের এই মহান বাণী
স্মরণ করেছেন শাহাদুজ্জামান। এখনকার বাংলাদেশ কেউ মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ব্যবসা
করছেন। সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধা দেশপ্রেমিক সাইকো হয়ে প্রলাপ আওড়াচ্ছেন।
ভিক্ষুকের থালাতে পয়সার ঝনঝন শব্দ শুনে স্টেনগানের গুলি বলে তার ভ্রম হয়।
এ-ভিক্ষুক এদেশের বঞ্চিত মানুষজন। রক্তাক্ত দেহ দেখে নির্বিকার মানুষের
কণ্ঠস্বরÑ ‘রক্তপাত হবে না? স্বাধীনতার গর্ভপাত হচ্ছে যে।’ আবার শুভত্ব
পোড়ানোর মহোৎসবে মেতে উঠেছে কিছু মানুষ। এরকম নানা বৈপরীত্যে টুকরো টুকরো
অনেকগুলো ঘটনা তুলে ধরেছেন গল্পকার। শেষপর্যন্ত যে আকুতি দিয়ে গল্পের শেষ
তা মর্মান্তিকÑ
“আমার স্বপ্নে মুক্তিযুদ্ধের সমকাল থেকে আজ অবধি
অতিক্রান্ত সময়ের ইঙ্গিতময় কিছু দৃশ্য আর সংলাপ উঠে এসেছে। কিন্তু কাল
যেখানে এসে থেমেছে, আমার স্বপ্নও এসে থেমে গেছে সেখানে। থেমেছে আলো
আঁধারিতে, জিজ্ঞাসায়, দ্বিধায়। আমার স্বপ্ন কালোত্তীর্ণ হতে পারে নি। কি
গল্প লিখবে, দ্বিধান্বিত স্বাপ্নিক ? অতএব আমি নির্দ্বিধায় একটি সিদ্ধান্তে
পৌঁছাই অবশেষে। আমি সিদ্ধান্ত নিই, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গল্পটি আমি আপাতত
লিখবো না ; অপেক্ষা করবো।”
এমনি স্বপ্ন ও স্বপ্ন-ভঙ্গের বাস্তব এই বিহ্বল গল্পগুলো।
খোরশেদ আলম, বাংলা বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন