উত্তর-উপনিবেশবাদ, মুক্তি এবং আমরা

 

আমরা এমন একটা পৃথিবীতে বাস করছি যেখানে বৌদ্ধিক মানুষের জন্য চিন্তার চর্চা একটা অনিবার্য বিষয়। দর্শন কিংবা তত্ত্বভাবনা ব্যতিরেকে সেখানে চলাই মুশকিল। বৌদ্ধিক মানুষের এও এক সঙ্কট—স্বাভাবিক জীবনটাকে দর্শন-পরিস্রুত না করলে হালে পানি পাওয়া যায় না। কিন্তু ভিন্নভাবেও জগতকে দেখা যেতে পারে। এই দেখাটা কি একটা দর্শন নয়? দর্শন শাস্ত্রবিদগণ কথাটা না-ও মানতে পারেন। কারণ সেখানে পদ্ধতির প্রশ্ন তোলাটা জরুরি।

পশ্চিম তার চিন্তার ফেরি নিয়ে আমাদের মধ্যে উপস্থিত। তারা আগেও এসেছে, এখনও সজ্ঞানে উপস্থিত। আর্থ-রাজনীতিক প্রয়োজন, এমনকি জ্ঞান-ভ্রমণের স্বাদ মেটাতে আমরাও সেই ফেরির যাত্রী। পশ্চিমের নৌকায় না উঠলে এই ভ্রমণ আমাদের সার্থক হয় না। এর ভিন্ন বিতর্কও থাকতে পারে। পূর্ব-পশ্চিমের বিভাজন স্বয়ং একটি পক্ষপাতদুষ্ট বিষয় কীনা অনেকদিন ধরেই বিষয়টা নিয়ে আমি চিন্তিত। উত্তর-উপনিবেশবাদী তত্ত্বটিও সেই পশ্চিমেরই তত্ত্ব। ভক্ষকের দেশ থেকেই রক্ষক বেরিয়ে এসেছে। যদিও উত্তর-ঔপনিবেশিক চিন্তার বেশখানিকটাই পূর্ব থেকে জাত হয়েছে। তবে একথা সত্য, পশ্চিম সমগ্র বিশ্বের অধিকাংশ ভূমির ওপর আধিপত্য বিস্তার করেছিল। আবার সেখান থেকেই বেরিয়ে এসেছে চিন্তার নতুন নতুন ক্ষেত্র।

বিজ্ঞানের আবিষ্কারের মতো দর্শন, সাহিত্য ও সমাজচিন্তায় আমরা ইউরোপ থেকেই অধিক প্রভাবিত। এই প্রভাবের ভেতরে থাকা বা বেরিয়ে যাওয়া দুটোই প্রবলভাবে বিরাজমান। না মানলে ক্ষতি নেই, চিন্তার নানা ছকের (প্যারাডাইম) মধ্যে এটা কিন্তু একটা প্রবল সত্য। আমরা পশ্চিমী আধুনিকতার জোয়াল শুধু নিজের কাঁধে চাপাইনি, অন্যকেও শিক্ষায়-দীক্ষায় সংগোপনে বাধ্য করেছি সেই রুচিতাকেই গ্রহণ করতে। স্থানিক ভাষা-সংস্কৃতির পুজো করেছি-করছি, সেটার অনেকখানিই ফ্যান্টাসি। অথবা বলা যেতে পারে, অতীতের প্রতি সহজাত নষ্টালজিয়া। গ্রামের বহু মানুষ যারা অন্তত তথাকথিত আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা দ্বারা বিক্ষত হয়নি, তারা নিজস্ব সাংস্কৃতিক বলয়ে বসবাসের সুযোগ পেয়েছে। সেখান থেকে সহজাতভাবে বেরিয়ে আসা শিল্পী-কারিগররা মানুষকে মুগ্ধও করেছে। সেই মুগ্ধতার উপভোক্তা ও প্রচারক হয়েছে স্বয়ং মধ্যবিত্ত শ্রেণি। এই শ্রেণিটাই আবার আত্মধ্বংসী, টানাপড়েনে অস্থির। তারা ত্রিশঙ্কুর মতো ইউরোপীয় আধুনিকতা আর নিজস্ব ঐতিহ্যের মিশেল হাওয়ায় সুস্বাস্থ্য কামনাকারী। সমূহ আত্মপ্রতারণা সত্ত্বেও তারাই সংস্কৃতির আতুরঘর, না হলেও পথ-প্রদর্শক।

সমাজের উচ্চবিত্ত শ্রেণি এসব নিয়ে ভাবে না। আর আমাদের দেশের উচ্চবিত্ত কি উচ্চ-মধ্যবিত্ত সবসময়ই তাদের এক পা বিদেশে। সেখানে চেতনা বা অচেতনা তেমন কোনো প্রভাব ফেলে না। চেতনাসম্পন্ন বুদ্ধিজীবী থেকে শুরু করে পয়সাওয়ালা নব্যপুঁজির মালিক—কেউই সেখানে ব্যতিক্রম নয়। অন্যদিকে নিম্নবিত্তের কাছে জীবন পরিচালনাই বড় চ্যালেঞ্জ। তারা দেশে-বিদেশে দিনমজুরি করে। তারাও স্বপ্ন দেখে শ্রেণিবদলের। এই শ্রেণিবদলের ধারণাটা প্রচলিত সমাজ এবং অহং থেকে প্রাপ্ত। কাজেই এক্কাট্টা অর্থনীতি-সংস্কৃতি বলতে আসলে কিছু নেই। সমস্তটাই আমাদের কল্পনা, বানানো। বাচ্চাদের হাতের ইলাস্টিক রাবারের একধরনের খেলনার মতো। যাকে কোনোভাবেই আকার বা শেপ-এ আটকে রাখা সম্ভব না। কেবল মুহূর্তের ফটোগ্রাফিক একটা ছবি সামনে এনে হয়তো বলা যাবে, এটাই হচ্ছে সেই ভাষা-রাজনীতি-সংস্কৃতির আকার। যে-আকারটা মধ্যবিত্ত সমাজ থেকে শুরু করে মূলধারার মিডিয়া-হাউসের উৎপাদিত সত্য হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়। আরো স্পষ্ট করে বলা যায়, আসলে আকারের প্রতিষ্ঠা দেয়া হয়। এই প্রতিষ্ঠার মধ্যে সমূহ সত্য নেই। তাৎক্ষণিক সত্যের একটা রূপরেখা রয়েছে মাত্র।   

উপনিবেশ তার সংস্কৃতি জোর করে চাপিয়েছে, কখনো আপোষে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে কার্যসমাধা করেছে। উপনিবেশের মানুষের মস্তিষ্ক ধোলাইয়ের মধ্য দিয়ে এটাই বিশ্বাস করানো হয় যে, উপনিবেশের দর্শন-সাহিত্য-সংস্কৃতি শ্রেষ্ঠ। উপনিবেশ চলে গেলেও সেই মানসিকতার বদল ঘটে না। উপনিবেশ শেষ হয়ে এলেও সেই ভাবধারা মস্তিষ্কে চোরাস্রোতের মতো প্রবাহিত হয়। এ-বিষয়টাই উত্তর-উপনিবেশবাদী তত্ত্বের প্রধান আলোচ্য। ‘রেচেড অব দ্য আর্থে’র লেখক ফ্রাঞ্জ ফানো, ‘ডিকলোনাইজিং দ্য মাইন্ডে’র লেখক নগুগি ওয়া থিয়োঙ্গা কিংবা ‘থিংস ফল অ্যাপার্টে’র লেখক চিনোয়া আচিবে, তাঁদের কথার সারমর্ম তো তা-ই। এখন সেই প্রভাবপুষ্ট ঔপনিবেশিক আবহাওয়া থেকে স্ব স্ব অঞ্চলের সাহিত্য-সংস্কৃতিকে বাঁচানোই একটা বড় কাজ। এখন বড় জোর আমরা উল্টো পথে নৌকা চালাতে পারি। তাইয়েব সালিহ্-র মতো ‘সিজন অব মাইগ্রেশন টু দ্য নর্থে’র মতো এবার আমরা উল্টো পথে ফেরি চালনা শুরু করলেই হয়তো অবস্থার কিছুটা বদল সম্ভব। তখন জোসেফ কনরাডকে বলা যায়, আপনি যে কালো-হৃদয় আবিষ্কার করেছিলেন ‘হার্ট অব ডার্কনেসে’র নামে, তা দ্রুত সরিয়ে নিন।

কিন্তু চিন্তাও কখনো কখনো ফ্যাশানে রূপান্তরিত হতে পারে। যেমন উপাসনালয়ে প্রার্থনা সেরে উঠে পরক্ষণেই সমূহ পাপে নিমজ্জিত হতে পারে তথাকথিত বকধার্মিক। ফলে এই ধর্মের ফ্যাশানটা তার কখনো কাজে আসে না। তেমনি ফ্যাশান চিন্তাও কোনো কাজের কথা নয়। জীবনের চর্চার সঙ্গে চিন্তা-প্রক্রিয়াকে এক করে না দেখলে উত্তর-ঔপনিবেশিক চিন্তাও মাঠে মারা যায়। তখন এডওয়ার্ড সাইদ, বিল অ্যাশক্রফট, হেলেন টিফিন, গৌতম ভদ্র, গায়ত্রী স্পিভাক, পার্থ চট্টোপাধ্যায় কি শাহিদ আমিন পাঠ কেবল ব্যর্থতায় পর্যুবসিত হয়।

উপনিবেশ জারি থাকতে পারে যে-কোনো প্রক্রিয়ায়। এমনকি আমি এখন যে-প্রবন্ধটা লিখছি এর ভাষা-কাঠামোতেও উপনিবেশ হাজির থাকতে পারে। যতটা সচেতন হওয়া সম্ভব, সেই যথাসর্বস্ব সাধনা দিয়ে সব অনাচারকে অতিক্রম করার নামই উত্তর-ঔপনিবেশিকতা। এ-বিষয়টা আমাদের ভাষা-সাহিত্য থেকে শুরু করে অর্থব্যবস্থা, রাজনীতি, জীবনধারা যেমন, আমরা সকালে যা দিতে দাঁত পরিস্কার করি তা-ও অন্তর্ভুক্ত। যে-ঘরে বসবাস করি তার কতটা আমাদের নিজস্ব? আমরা কি আষ্টেপৃষ্ঠে বিদেশীয় পণ্যকাঠামোতে নিমজ্জিত নই? সেখান থেকে বের হওয়ার রাস্তা কি খনন করছি সচেতনে-সযতনে? নিজেদের জ্ঞান ও স্থানীয় মানুষের জ্ঞান-বিজ্ঞানকে ফলপ্রসু করে তোলার প্রচেষ্টা অথবা আয়োজন আমাদের কতটুকু?

ফলে একটা অনুশীলনধর্মী জীবন বড় বেশি প্রয়োজন। এই অনুশীলন থেকে বেরিয়ে আসবে নতুন ভাবধারা তথা চিন্তা-কাঠামো। নিজস্ব চিন্তার সফল ভূমি তৈরি করার জন্য তা-ই হয়তো অধিকতর কার্যকর। কথাটা যদিও বস্তু-প্রভাবিত অবস্তুতগত সংস্কৃতি-নির্মাণের দিকে ইঙ্গিত করবে। অনেকে ভাববেন, সেই ধ্রুপদী মার্কসবাদের ঘরানায় কথাটা বলা হচ্ছে কীনা? সে-অর্থে খোদ মার্কসবাদও তো ইউরোপের চিন্তাকাঠামোর ফসল। ফলে কি বাদ দেবো আর কি-ই বা ধরবো? কাকে অতিক্রম করবো আর কোন গুরুর পথে সাধনা করবো—সেটাও কিন্তু উত্তর-ঔপনিবেশিক সমাজের একটি বড় অন্তর্ঘাত। তা না বলে বাছাই-প্রক্রিয়াও বলা যেতে পারে। কিন্তু উত্তর-ঔপনিবেশিকতাবাদের নামে নতুন আরেকটি ‘চিন্তা-কাল্ট’ তৈরি করার প্রয়োজন আসলে নেই। অর্থাৎ মনেপ্রাণেই তা গ্রহণের সাধনা করতে হবে। এর নামে কোনো বিভাজন অথবা চরমপন্থা তৈরি করা যাবে না। পাছে আরেকটা মৌলবাদ না হয়ে ওঠে। তা না-হলে ব্যর্থতার কানাগলিতে ঘুরপাক খেতে খেতেই আমরা তত্ত্বচিন্তায় আবর্তিত হতে থাকবো। প্রকৃত ফল সেখান থেকে আশা করা কেবল বৃথাই হবে।  

উপনিবেশ কোথায় নেই? আজ যে-লোকটি একেবারে নিজের পরিবারের মানুষকেই শোষণ করছে, দমন-প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আরেকজনের ওপর দখলদারিত্ব করছে, সেও একটা উপনিবেশ। উপনিবেশ হাজির থাকে ছোট পরিসর পরিবার থেকে বৃহৎ পরিসর আন্তর্জাতিক পর্যায় পর্যন্ত। আরো গভীরে গেলে নিজের মনটাও কখনো শরীরের উপনিবেশ। অথবা শরীরও কখনো মনের উপনিবেশ। আত্মজ্ঞানের জায়গা থেকে উপলব্ধি করলেই কেবল কথাগুলোর সত্যতা খুঁজে পাওয়া যেতে পারে।

শহরের যে-ব্যবসায়ী ব্যক্তিটি গ্রামে এসে ধানের আড়তে পুঁজি খাটাচ্ছে বা দেদারসে জমি কিনছে, সে কি উপনিবেশের বাইরের লোক? ব্যক্তিমানুষ ব্যক্তিমানুষের ওপরে, খোদ পরিবারের ভেতরে, কিংবা এক পরিবারের লোক অন্য পরিবারের ওপর নানা কারণে প্রভুত্ব খাটাচ্ছে। প্রভুত্ব খাটাচ্ছে পাড়ার মাস্তান, স্থানীয় শাসক থেকে আন্তর্জাতিক মোড়ল পর্যন্ত। ভিন্ন একটা জাতি, ভিন্ন একটা বর্ণ/ধর্ম সবসময়ই আরেকটার ওপর প্রভুত্ব খাটানোয় লিপ্ত। এক দেশ আরেক দেশের অর্থনীতির ওপর চেপে বসে আছে। স্বার্থসংশ্লিষ্ট যে-কোনো কর্ম-প্রক্রিয়া, যা অন্যের ওপর আধিপত্য জারি রাখে, আধিপত্যকে কায়েম রাখতে উৎসাহী—এই সমস্তটার মধ্যেই গভীর উপনিবেশ লুকিয়ে আছে। সেই উপনিবেশ থেকে মুক্তি কোথায়? হয়তো সেই মুক্তিপথ লুকিয়ে আছে দৈনন্দিন জীবনের ব্যবস্থাপত্রকে ঠিক করার মধ্যে। এটাই ব্যবহারিক বাস্তবতা। এখান থেকেই উত্তর-উপনিবেশী চিন্তাকে বোঝাপড়া জরুরি। কার্যকর ব্যবস্থা-গ্রহণের মধ্য দিয়ে মুক্তি পাওয়ার সাধনাও জরুরি।

আমরা আজকে আন্তর্জাতিক বিশ্বব্যবস্থায় নানাদিক থেকেই আর্থ-রাজনীতিক প্রক্রিয়া দ্বারা আবদ্ধ। এই চক্র থেকে সহজেই নিজেকে ছুটিয়ে নেয়া সম্ভব নয়। বরং উপনিবেশ চলে যাবার পরেও নয়া-উপনিবেশী ব্যবস্থা দ্বারা আমরা আন্তর্জাতিক-আন্তর্জালিক চক্রে যেভাবে নিমজ্জমান, সেখান থেকে চাইলেও নিজেকে বা নিজেদেরকে আলাদা করতে পারছি কি? বাস্তবতা হচ্ছে—পারছি না।

তাহলে উত্তম সমাধান কী? অর্থাৎ উপনিবেশী সকল দৃশ্য-অদৃশ্য জালচক্র ছিন্ন করবার উপায়গুলো কী? এর সমাধান দুরূহ থেকে দুরূহতম। তাহলে সব ব্যবস্থারই স্থানীয়করন করতে হবে। খাদ্য-বস্ত্র থেকে ভাষা-সংস্কৃতি পর্যন্ত সবটাই। কিন্তু আজকের এই আন্তর্জালিক বিশ্বে চাইলেও এই স্থানীয়করন সম্ভব কি? সংস্কৃতি ও জীবনধারার সংকরায়ন ইতোমধ্যেই ঘটে গেছে। বরং বলা যেতে পারে, এই সংকরায়ন আরো গুরুতর, শেকড়সমৃদ্ধ; প্রাচীন, হয়তো মহাপৃথিবীর সমান বয়সী। সেকথা ব্যতিরেকেও, যোগাযোগ-প্রবণ বিশ্বে নানা চক্রে আমরা যেভাবে নিপতিত-নিমজ্জিত হয়েছি সেখান থেকে মুক্তি নেই। তাহলে কি চূড়ান্ত হতাশার জগতে সবাই পতিত হয়েছি ইতোমধ্যেই? এক অর্থে হয়তো তা-ই। অন্য অর্থে— হয়তো নয়।

প্রায় শুরু থেকেই ব্যক্তিগত দখলদারিত্ব নিয়ে পৃথিবীর জীবন-সূচনা করেছে মানুষ। এই দখলদারিত্বের স্বভাবেই তার ব্যক্তিমালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে প্রত্যেকটি জিনিসের ওপর। শুধু বস্তু নয়, অবস্তুগত সকল বিষয়েও যখন মূল্যের বিনিময় তৈরি হয়েছে-হচ্ছে, তখন অনিবার্যভাবে সে-জগতে মানুষ আপনি প্রবেশ করেছে-করছে-করবে। কোনো শক্তিই মানুষের এই আর্থ-রাজনীতিক প্রক্রিয়াকে রোধ করতে পারেনি। বরং ক্রমান্বয়ে বড় বড় প্রাতিষ্ঠানিকতা, কখনো গণতন্ত্র কখনো সমাজতন্ত্র, আবার কখনো ধর্মনিরপেক্ষতা কি ধর্মতন্ত্রের নামে পুনঃপুন প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। এই প্রতিষ্ঠা লাভের পেছনে আমরা সবাই যেমন অংশীদার, তেমনি প্রত্যেকেই গোপন রসদ-সরবরাহক।

বস্তুত ধ্রুপদী যুগ থেকে আধুনিক যুগ, সেখান থেকে আবার আধুনিকোত্তর যুগ, আমরা যে নামেই এই যুগকে ডাকি না কেন, সব সময়ই নিজ নিজ মতাদর্শিক চাপে তা নিজেই নিজের উপনিবেশ হয়ে উঠেছে; আমাদের শরীর যেমন মনের উপনিবেশ হয়ে উঠেছে। আমরা চাইলেই বর্তমান পৃথিবীর সুখ আর আরামজনক অবস্থান থেকে, ভোগ থেকে ত্যাগের রাস্তায় সহসা সরে যেতে পারবো না। এটাই মানবজন্মের ট্রাজেডি এবং এক অনন্য ট্রাজেডি।


লেখক : শিক্ষক, বাংলা বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।        

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন